আলি হায়দার, কিশোরগঞ্জ থেকেঃ কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ এম রুহুল কুদ্দুছ ভূঁইয়া (জনি)র উপর আজ রবিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে হামলা ও তার সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদের সামনে এই হামলা চালায় বলে জানা গেছে। এই সময় তার ভাতিজা নিয়াজ হাসান রকি হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
হামলা সম্পর্কে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সকালে চেয়ারম্যান সরকারি গাড়ি যোগে বাসা থেকে বের হয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে, উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় তার গাড়িটি অডিটোরিয়ামের কাছে গেলে সোহেল ও কামরুলসহ একদল যুবক তার গাড়ি গতিরোধ করে এবং তাকে উদ্দেশ্য করে লাঠিসোটা নিয়ে তারা একযোগে হামলা চালায় এবং গাড়িটি ভাঙচুর করে।
চেয়ারম্যানের পক্ষে থেকে আরও জানানো হয়, এই ঘটনাটি প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তাঁর ভাতিজা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপের কাজ । এই সময় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেই এ হামলায় মদদ দিয়েছেন।
এই ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে অভিযুক্ত করার বিষয়ে তার সাথে কথা বললে, তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এগুলো সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা অভিযোগ। আমি আজ ঘটনার আরও আধা ঘণ্টা পর ঘুম থেকেই উঠি । ঘুম থেকে উঠে এই ঘটনা শুনতে পাই এবং ঘটনার জন্য আমাকে দায় করার হচ্ছে জানতে পারি। এটা শুনে আমি বিষণ অবাক হয়েছি। এসব মূলত আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য করা হচ্ছে।
এই সময় তিনি আরও জানান, শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যান চাকরি দেওয়ার নাম করে কামরুল নামের এক যুবকের কাছে টাকা নিয়ে চাকরি দেয়নি। ঐ বিষয়টি নিয়েই কামরুল হয়তো লোকজন নিয়ে তাকে আটকায়। শুনেছি ঐ সময় সেখানে হাঙ্গামাও হয়েছে।
এই বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আহমেদ তুলিপ বলেন, ‘আমিও একজন জনপ্রতিনিধি। রাজনীতি আমিও করছি কিন্তু এই ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি আমি করি না। আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, এটা মূলত আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য বলা হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, আমি হামলার পরে ঘটনা শুনেছি, সেখানে হাঙ্গামা হয়েছে এটা শুনেছি, কিন্তু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি ও শুনিনি। গাড়ি ভাঙলে সম্ভবত উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজনই গাড়ি ভেঙে, আমাদের ওপর দোষ চাপানোর জন্য ভেঙেছে।’
চেয়ারম্যানের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে নিকলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুল আলম সিদ্দিকী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কিন্তু আমরা এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি । অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরে থানায় অভিযোগ করার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজই আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করবো। এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।